পীরগঞ্জ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফেরাবে কে

প্রকাশিত: আগস্ট ১৬, ২০২৫

ঐতিহ্যবাহী এই বিদ্যালয় এখন চরম সংকটে।
পড়াশোনার পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে প্রতিদিন।
ক্লাস চলাকালে ছাত্ররা হঠাৎ শ্রেণিকক্ষ থেকে বের হয়ে যায়, শিক্ষককে তোয়াক্কা করছে না।
গত বছরের ৫ আগস্ট থেকে দুর্নীতি–অনিয়মের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে শিক্ষার্থীরা।
অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ইতিবাচক হলেও শিক্ষার পরিবেশ ভেঙে পড়েছে।
বিদ্যালয়ের জমির দোকানপাট থেকে আসা অর্থের ব্যবহারকে ঘিরে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।
প্রধান শিক্ষক সাময়িক বরখাস্ত, ভারপ্রাপ্ত প্রধানও পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ।
এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে এ ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের পথে যাবে।
সমাধান হতে পারে—কয়েক বছরের জন্য একজন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা বা অভিজ্ঞ প্রশাসনিক কর্মকর্তার হাতে তত্ত্বাবধায়ক দায়িত্ব দেওয়া।
সরকারিকরণের জন্য জোড়ালো দাবি তোলা।
পীরগঞ্জ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়, এটি পীরগঞ্জের গৌরব—এটি রক্ষা করা জরুরি।
…….সম্পূর্ণ লেখা
ঠাকুরগাঁওয়ের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পীরগঞ্জ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় আজ এক অদ্ভুত সংকটে পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এখানে পড়াশোনার পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কয়েকদিন আগে বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি জানালেন, ক্লাস চলাকালে ছাত্ররা হঠাৎ করেই শ্রেণিকক্ষ থেকে বের হয়ে যায়। শিক্ষককে তোয়াক্কা করছে না অনেকেই। শিক্ষকরাও এখন শিক্ষার্থীদের কিছু বলতে পারছেন না। কারণ শিক্ষার্থীরা গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকেই বিদ্যালয়ের দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে আন্দোলনসহ বিভিন্ন যৌক্তিক দাবি জানিয়ে আসছে।
অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো নিঃসন্দেহে ইতিবাচক বিষয়। তবে সেটি যদি শিক্ষার মূল পরিবেশ নষ্ট করে ফেলে, তাহলে সমস্যা আরও গভীর হয়। এখনকার বাস্তবতায় দেখা যাচ্ছে, বিদ্যালয়ে নিয়ম শৃঙ্খলা কার্যত ভেঙে পড়েছে।
এখানে সবচেয়ে বড় সমস্যা তৈরি হয়েছে বিদ্যালয়ের আয়ের উৎসকে ঘিরে। বিদ্যালয়ের জমিতে থাকা বিভিন্ন দোকানপাট থেকে যে অর্থ আসে, তার ব্যবহার নিয়েই অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। এর প্রভাব এসে পড়ছে শিক্ষার্থীদের ওপর। কিছু শিক্ষক নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য শিক্ষার্থীদেরও ভুল পথে পরিচালিত করছেন।
প্রধান শিক্ষক মফিজুল হকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এরপর ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শাহজালাল সাজু দায়িত্ব নিলেও বিদ্যালয়ের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে পারেননি। ফলে প্রতিষ্ঠানটি প্রতিদিন বিশৃঙ্খলার গভীরে ডুবে যাচ্ছে।
এখন যদি দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তবে এ ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয় ধ্বংসের পথে চলে যাবে। এর ফল ভুগবে পুরো পীরগঞ্জ। ফলাফল খারাপ হবে, শিক্ষার্থীরা সঠিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে, আর দীর্ঘমেয়াদে এর সামাজিক প্রভাব মারাত্মক হবে।
এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য স্থানীয়দের দাবি তোলা উচিত যে বিদ্যালয়টি কয়েক বছরের জন্য হলেও একজন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা বা অভিজ্ঞ প্রশাসনিক কর্মকর্তার হাতে তত্ত্বাবধায়ক দায়িত্ব দেওয়া হোক। তিনি রাজনৈতিক চাপমুক্ত থেকে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগী হতে পারবেন।
এবং সেই সঙ্গে বিদ্যালয়টি সরকারি করার দাবি জোড়ালোভাবে তোলা।
পীরগঞ্জ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় শুধু একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়, এটি পীরগঞ্জের গৌরবের অংশ। সেই গৌরব রক্ষার দায়িত্ব নিতে হবে এখনই। না হলে এর ক্ষতি হবে দীর্ঘস্থায়ী, যা আর কোনোভাবেই পূরণ করা সম্ভব নয়।