ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে হাজার হাজার গরু নতুন করে চর্মরোগে আক্রান্ত হয়েছে। এরই মধ্যে মারা গেছে প্রায় ৩০টি গরু। অনেক টাকা খরচ করে চিকিৎসা করিয়েও এ রোগের হাত থেকে গরুকে রক্ষা করতে পরছে না খামারি ও কৃষকরা। তাদের অভিযোগ উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিস থেকে তেমন কোন চিকিৎসা সেবা বা পরামর্শ পাওয়া যাচ্ছে না। তবে অভিযোগ ঠিক নয় দাবি করে উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা বলছেন, চর্ম রোগ বা লাম্পি স্কিন ভাইরাসে উপজেলায় কয়েক হাজার গরু আক্রান্ত হলেও কোন গরু মারা যায়নি। রোগ প্রতিরোধে কাজ করছেন তারা।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খোজ নিয়ে জানা গেছে, বথপালিগাঁও, নারায়পুর, ভাকুড়া, গণিরহাট, চন্ডিপুর, মালগাঁও, মহেশপুর, মোহাম্মদপুর, করনা, কৃষ্টপুর, চন্দরিয়া, বৈরচুনা, কলিযুগ, উপদইল, মল্লিকপুর, বনুয়াপাড়া, সাগুনী, সেনগাঁও, শাশোর খটশিংগা, বহড়া, পটুয়া পাড়া সহ উপজেলার আরো বেশ কয়েকটি গ্রামে ব্যাপক আকারে গরুর চর্ম রোগ দেখা দিয়েছে। এ রোগে আক্রন্ত গরুর শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফুলে যাচ্ছে। প্রচন্ড জ্বর থাকছে। কোন কিছু খাচ্ছে না। কয়েক দিনেই ফুলে যাওয়া স্থানের চামড়া পচে খতের সৃষ্টি হচ্ছে। এতে গত কয়েক সপ্তাহে হাজীপুর ইউনিয়নের পটুয়াপাড়া গ্রামে ২টি, সেনগাঁও ইউনিয়নের বেলদহী গ্রামে ২টি, উপদইল গ্রামে ১টি, বৈরচুনা গ্রামে ২টি, আজলাবাদ গ্রামে ২টি, জাবরহাট ইউনিয়নের রনশিয়া গ্রামে ৫টি, চন্দরিয়া গ্রামে ৩টি, হাটপাড়া গ্রামে ২টি, মাটিয়ানী গ্রামে ২টি, আমিরপাড়ায় ১টি, সরকারপাড়ায় ২টি ও দৌলতপুর ইউনিয়নের সাগুনী গ্রামে ১টি সহ উপজেলায় প্রায় ৩০টি গরু মারা গেছে।
নারায়নপুর গ্রামের কৃষক কামাল হোসেন, হাসিবুর রহমান, বথপালিগাঁও এলাকার কামরুজ্জামান, সাইফুল ইসলাম, ভাকুড়া গ্রামের সাজ্জাদ হোসেন, আবির, নিয়ামতপুরের বিষ্ণুপদ রায়, রঘুনাথপুরের আসাদুজ্জামান, গোগর পাটুয়া পাড়ার হাফিজ, করনাইয়ের রফিকুল ইসলাম সহ অনেকে জানান, গরুর দেহের বিভিন্ন জায়গায় প্রথমে ফুলে উঠছে। কয়েকদিনের মধ্যেই তা সারা শরীরে ছেয়ে যাচ্ছে, গরু খাচ্ছে না। শরীরের অনেক জ্বর থাকছে। ওষুধ খাওয়ানোর পরও গরু মারা যাচ্ছে। প্রাণি সম্পদ অফিস থেকে কোন প্রকার সহয়োগীতা বা চিকিৎসা সেবা পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ তাদের।
উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ অমল কুমার রায় বলেন, লাম্পি স্কিন নামে এক ধরণের ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গরুর চর্ম রোগ দেখা দিচ্ছে। এটি মশা ও মাছির কামড় থেকে ছড়ায়। এ রোগের এখন পর্যন্ত কোন প্রতিষেধক বা টিকা বের হয়নি। আক্রান্ত হলে প্যারাসিটামল ও এন্টি হিসটামিন জাতীয় ওষুধ খাওয়ানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তার দপ্তরের হিসাব মতে উপজেলায় খামার এবং কৃষক পর্যায়ে গরুর সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ৯০ হাজার। এর মধ্যে পাঁচ হাজারের মত গরু আক্রন্ত হয়েছে। কোন গরু মারা যাওয়ার খবর তার জানা নেই বলে জানান ঐ প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা।