এক সময় সামাজিক কোন অনুষ্ঠানে দাওয়াতিদের খাওয়ানো হতো কলা পাতায়। কলা পাতায় ভোজন করতে মাদুর পেতে বসে পড়তেন সব শ্রেনি পেশার মানুষ। কালের বিবর্তনে ও আধুনিকতার ছোয়ায় এটি সমাজ থেকে হারিয়ে গেছে। কলা পাতায় খাওয়ার দৃশ্য এখন আর চোঁখে না পড়লেও ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে তারবাগান গুচ্ছগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দেখা মিলবে এমন দৃশ্যের। সেখান শিক্ষার্থীদের দুপুরে মিড-ডে মিল খায়ানো হয় কলা পাতায়। বিদ্যালয়ের উপস্থিতি বৃদ্ধি ও ঝড়েপড়া রোধে এ উদ্যোগ কর্তৃ পক্ষের।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে বিদ্যালয়টিতে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের শিক্ষকগন বিদ্যালয় মাঠে ছাত্র-ছাত্রীদের মাটিতে বসিয়ে কলা পাতায় মিড-ডে মিলের খিচুরী খাওয়াচ্ছেন। মাটিতে বসে কলা পাতায় স্কুলের মিড-ডে মিল খাওয়ার বিষয়ে পঞ্চম শ্রেনির শিক্ষার্থী আফিয়া,তানজিনা ও সাব্বির,৪র্থ শ্রেণীর মারিয়া,সাদিয়া,সাকিল এবং ৩য় শ্রেণীর খুশি ,জুবায়েদ ও মুন্নি সহ অনেকেই বলেন, আমাদের স্কুলে মিড-ডেমিল খাওয়ার বিষয়ে কনো টাকা লাগেনা। মাসে দুই দিন ভাত ও খিচুরী এবং প্রতিদিন টিপিনের সময় বিস্কুট,পাউরুটি কলা দেওয়া হয়। মিড-ডে মিল খাওয়ার জন্য থালা,পানির গ্লাস ও বসার চট সবকিছুই ছিল কিন্ত করোনায় গত দুই বছরে স্কুল বন্ধ থাকায় এ সব নষ্ট হয়ে গেছে। এ জন্য আমরা মাটিতে বসে কলা পাতায় খাই। এতে আমরা অনেক আনন্দ পাই। দাদা-দাদি ও নানা-নানি দের মুখে শুনেছি- আগে নাকি সব অনুষ্ঠানেই এ ভাবে সবাই মাটিতে বসে কলার পাতায় মজা করে খেত। তাই আমরাও মাটিতে বসে মজা করে খাই।
তবে ছাত্অর-ছাত্রীদের অভিযোগ, তাদের স্কুলে খেলাধুলার জন্য কনো কিছু না থাকায় তারা স্কুলে খেলাধুলা করতে পারছে না। পানি খাওয়ার কনো টিউবওয়েল এবং ওয়াস রুম নাই। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন,স্কুলের উপস্থিতি বৃদ্ধি ও ঝড়ে পড়া রোধের জন্য আমি নিজ উদ্দ্যেগে গত ২০১৯ সাল থেকে স্কুলে মিড-ডে মিল চালাচ্ছি। বর্তমানে স্কুলে ১৩০জন ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। করোনায় গত দুই বছরে স্কুল বন্ধ থাকায় মিড-ডে মিলের সরঞ্জাম গুলো নষ্ট হয়ে গেছে আর আমিও অর্থ সংকটে আছি। কিনতেও পারছি না। কিন্ত উপস্থিতি বৃদ্ধি ও ঝড়ে পড়া রোধের জন্য মিড-ডে মিল তো চালাতে হবে। তাই বুদ্ধি করে পুরাতন প্রথায় কলার পাতায় খাওয়াচ্ছি। এতে আমার অনেক অর্থ সাশ্রয় হচ্ছে।