কৃষকের কাছ থেকে গম ক্রয়ের লক্ষে একটি খাদ্য গুদামের অনুকুলে বরাদ্দকৃত সরকারি বরাদ্দ থেকে ৩’শ টন কেটে অন্য খাদ্য গুদামের নামে সরিয়ে নেওয়ার প্রতিবাদে খাদ্য গুদাম ঘেড়াও করে তুমুল প্রতিবাদ করে স্থানীয় কৃষকরা। আর এ প্রতিবাদের মুখে কেটে নিয়ে যাওয়া বরাদ্দ আবার ঐ খাদ্য গুদামের অনুকুলে ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছে খাদ্য বিভাগ। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার বিকালে ঠাকুরগাওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার ভোমরাদহ খাদ্য গুদামে।
ভোমরাদহ খাদ্য গুদাম ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মশিউর রহমান ও ভুক্তভোগী কৃষকরা জানান, কৃষকের ফসলের ন্যায্য মুল্য নিশ্চিত করতে চলতি মৌসুমে কৃষকের কাছ থেকে সরকারী ভাবে গম কেনার জন্য ভোমরাদহ খাদ্য গুদামের অনুকুলে ৮৬৫ টন বরাদ্দ করা হয়। ৩ মে গম কেনা শুরু হয়। এরই মধ্যে প্রায় ৪’শ টন গম কেনা হয়। বৃহস্পতিবারও কৃষকরা গুদামে গম বিক্রির জন্য নিয়ে আসেন। দুপুরে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় থেকে চিঠি দিয়ে গুদাম কর্মকর্তাকে জানানো হয়, ভোমরাদহ খাদ্যগুদামের নামে বরাদ্দকৃত ৮৬৫ টনের মধ্যে ৩০০ টন কেটে পীরগঞ্জ খাদ্য গুদামের অনুকুলে বরাদ্দ করা হয়েছে। এতে গম কেনা সাময়িক বন্ধ করে দেন ভোমরাদহ খাদ্য গুদাম কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি জানা জানি হলে খাদ্য গুদামে গম নিয়ে আসা কৃষক সহ স্থানীয় কৃষকরা একত্রিত হয়ে এর প্রতিবাদ জানিয়ে ভোমরাদহ খাদ্য গুদাম ঘেড়াও করে প্রতিবাদে ফেটে পড়েন। বিষয়টি নিয়ে ঐ এলাকার ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হিটলার হক সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাও প্রতিবাদ জানায়। পরে কৃষকের প্রতিবাদের মুখে বিকালেই ঐ ৩০০ টন বরাদ্দ আবারো ভোমরাদহ খাদ্য গুদামের অনুকুলে ফেরত দেয় উপজেলা খাদ্য বিভাগ।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আব্দুল মোমিন জানান, পীরগঞ্জ খাদ্য গুদামের অনুকুলে প্রায় ২৪’শ টন বরাদ্দ হওয়া গম এরই মধ্যে কেনা শেষ হলেও ভোমরাদহ খাদ্য গুদামের নামে বরাদ্দ করা সব গম তারা কিনতে পারেনি। এতে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের সাথে পরামর্শ করে সেখান থেকে ৩’শ টন বরাদ্দ কেটে পীরগঞ্জ খাদ্য গুদামে নেওয়া হয়। এতে কৃষকদের মধ্যে কিছুটা অসন্তোষ দেখা দেয়। পরে কৃষকের কথা বিবেচনা করে এবং অন্য কর্মকর্তাদের কথা মতো তা আবার ভোমরাদহের অনুকুলে ফেরত দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, উপজেলার ভোমরাদহ, খনগাও এবং কোষারানীগঞ্জ ইউনিয়নের কৃষকদের জন্য ভোমরাদহ এবং পৌরসভা সহ অন্যান্য উপজেলার বাকি ইউনিয়নের কৃষকদের জন্য পীরগঞ্জ খাদ্য গুদামে সরাসরি গম বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়। লটারির মাধ্যমে কৃষক নির্বাচন করে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে গম কেনার কথা বলা হলেও প্রকৃত কৃষকরা এ সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন বলে অভিযোগ অনেকের।