
অনাবৃষ্টি আর ক্ষেতে নানা রকমের রোগ-বালাইয়ের কারনে ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে এবার আশানুরুপ আমন ধান ঘড়ে তুলতে পারেনি কৃষক। কৃষি উপকরনের দাম বৃদ্ধি এবং হরতাল- অবরোধের কারণে ধানের দাম নিম্মমুখী হওয়ায় চিন্তার ভাজ পড়েছে কৃষকের কপালে। দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তারা। ক্ষতির কথা স্বীকার করে কৃষি বিভাগ বলছেন, ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষকদের রবি মৌসুমে প্রণোদনার আওতায় আনা হবে।
পীরগঞ্জ সহ ঠাকুরগাঁওয়ে এ বছর আমন আবাদ মৌসুমে খুব কম বৃষ্টিপাত হওয়ায় খরা বিরাজ করছিল মাঠেজুড়ে। ধান চাষে করতে হয়েছে বাড়তি সেচ দিয়ে। খড়ার কারণে ক্ষেতে রোগ বালাইয়ের আক্রমনও ছিল ব্যাপক। এতে কাংখিত উৎপাদন হয়নি আমন ধানের। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার একর প্রতি ১০ থেকে ১৫ মন ধান কম উৎপাদন হয়েছে। কয়েক দিন আগে ৮০ কেজি ওজনের কাচা ধানের বস্তা মাঠে বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৭ শ থেকে এক হাজার ৮ শ টাকায়। খুচরা পাইকাররা তা শুকিয়ে বাজারে বিক্রি করেন ২ হাজার ২ শ থেকে দুই হাজার চার’শ টাকায়। এখন হরতাল অবরোধের কারণে বাজারে ধান দামও নিম্মমূখী। বাইরের পাইকার না আসায় এবং এখান থেকে অন্য জেলায় ধান পাঠানো কার্যক্রম প্রায় বন্ধ থাকায় এরই মধ্যে বস্তা প্রতি দাম কমেছে দুই থেকে আড়াই’শ টাকা। এতে চিন্তার ভাজ পড়েছে কৃষকের কপালে।
পীরগঞ্জ উপজেলার সরকারপাড়া গ্রামের কৃষক দুলাল সরকার জানান, অনাবৃষ্টির কারনে স্যোলো মেশিন দিয়ে সেচ দিতে হয়েছে। রোগ বালাইয়ের আক্রমনও ছিল বেশি। এতে উৎপাদন অনেক কমেছে।কিন্তু খরচ বেড়েছে।
জগথা গ্রামের কৃষক শরিফুল ইসলাম জানান, গত বছর একরে আমন ধান হয়েছিল ৪০ থেকে ৬০ মন। এবার ফলন হয়েছে ৩০ থেকে ৪৫ মন। ফলন কমেছে কিন্তু উৎপাদন খরচ রেড়েছে।
নারায়নপুর গ্রামের কৃষক বাদল হোসেন জানান, কয়েক দিন আগে বাজারে ধানের যে দাম ছিল- হরতাল অবরোধের কারনে এখন বস্তা প্রতি দুই থেকে আড়াইশ টাকা দাম কমে গেছে। এতে কৃষক চরম বে কায়দায় পড়েছেন।
ধান ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম জানান, হরতাল-অবরোধের কারণে ব্যবসায়ীরা ট্রাকে করে বাইরে ধান বা চাল পাঠাতে সাহস পাচ্ছেন না। পরিবহন সমস্যার কারণে এখন স্থানীয় বাজার কিছুটা নিম্মমূখী।
আবহাওয়ার কারণে আমন ফলনে কিছুটা সমস্যা হয়েছে উল্লেখ করে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সিরাজুল ইসলাম জানান, এবার জেলায় ১ লাখ ৩৭ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৪ লাখ ২৯ হাজার ৭১৬ মেট্রিক টন। আবাদ লক্ষ্যমাত্রা পুরন হলেও কম বৃষ্টিপাত ও নানা ধরণের রোগ বালাইয়ের কারণে এবার আমন ধানের ফলনে কিছুটা সমস্যা হয়েছে। কৃষকদের রবি মৌসুমে প্রণোদনার আওতায় এনে ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার চেষ্টা করা হবে।