ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে হঠাৎ ঝড়ো হাওয়ায় গাছপালা, ফসল, ঘরবাড়ি ও বৈদ্যুতিক খুঁটি উপড়ে পড়ে ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে। শনিবার বিকালে বৃষ্টির সাথে হঠাৎ ঝড়ো হওয়ায় এসব ক্ষয়ক্ষতি হয়। এতে এখনো ক্ষয় ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করতে পারেননি কৃষি বিভাগ।
জানা যায়, প্রচন্ড তাপদাহ ও ভ্যাপসা গরমের মধ্যে বিকালে হঠাৎ করে বৃষ্টি নামে। এ সময় উপজেলার বিভিন্ন এলাকার উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যায়। এতে দূর্গাপুর, হাজিপুর, ভেবড়া, সিংগারোল, সেনগাঁও, কৃষ্টপুর, দহপাড়া, বাদনোহালী সহ বিভিন্ন এলাকায় গাছপালা ভেঙ্গে পড়ে, ঝড়ে পড়ে বাগানের আম সহ লিচু, মাটির সাথে নুয়ে পড়েছে ধান ও ভূট্টা ক্ষেত। বিভিন্ন এলাকায় বেশ কয়েকটি বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়েছে। এতে বিদ্যুৎ বিভ্রাট চরমে উঠেছে।
সিংগারোল গ্রামের আশরাফুন বেওয়া জানান, বৃষ্টির সাথে হঠাৎ করেই ঝড়ো হওয়া বইতে শুরু করে। এ সময় আমার ঘরের টিনের চালা উড়িয়ে নিয়ে গাছের সাথে ঝুলে আছে। আমার স্বামী নেই। দুই ছেলে মেয়ে নিয়ে কোন রকমে খেয়ে না খেয়ে দিনপার করছি। এখন সন্তানদের নিয়ে কোথায় যাবো আর বাড়ি ঘরই কিভাবে মেরামত করবো বুঝতে পারছিনা।
দহগাঁ গ্রামের জিয়া মন্ডল জানান, কিছু বুঝে উঠার আগেই বৃষ্টির সাথে প্রবল বেগে বাতাস শুরু হয়। মুহুর্তেই আমার বসত ঘর সহ দোকানটি ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেছে। একই এলাকা ধান ব্যবসায়ী আব্দুস সোবানেরও দুটি শয়ন ঘর ভেঙ্গে গেছে।
দূর্গাপুর এলাকার কৃষক খায়রুল ইসলাম জানান, অন্যান্য বারের থেকে এবার ধানের ফসন ভালো হয়েছিল। বুকে আশা বেঁধেছিলাম এবার ধান বিক্রি করে আগের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবো। ধানগুলো কাটার উপক্রম হয়েছিল। কিন্তু ঝড়ো বাতাসে সব আশা তছনছ হয়ে গেছে। কয়েক বিঘা জমির ধান মাটিতে হেলে পড়েছে। এ ক্ষতি এখন কিভাবে পূরণ করব।
ভেবড়া গ্রামের কৃষক নয়ন আলী জানান, শনিবার বিকেলে হঠাৎ প্রচন্ড গতিতে ঝড়ো বাতাস শুরু হয়। এতে ভূট্টাক্ষেত বাড়ির বেড়া সহ গাছপালা ভেঙ্গে অনেক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে। বাগানের আম ও লিটু ঝড়ে পড়ে নষ্ট হয়ে গেছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তারিফুল ইসলাম জানান, এখনো পুরো উপজেলায় ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি। বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শনে লোকজন পাঠানো হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা করে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগীতা করা হবে।
উপজেলা ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা লায়লা আরজুমান বেগম জানান, প্রতিদিনই আবহাওয়া খারাপ থাকছে। এখন পর্যন্ত ক্ষয় ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। তবে ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণে কৃষি বিভাগের লোকজন কাজ করছে।