কালীগঞ্জ উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের দোলান বাজার এলাকার কলাপাটুয়া গ্রামের মৃত ইব্রাহীম খলিলের ছেলে ইমরান হোসেন (৩০) গরু-মহিষের মাংসের ব্যবসা করেন। তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভালোই চলছিল। পুরো উপজেলার নামকরা সব হোটেল মালিকরা তার কাছ থেকেই মাংস ক্রয় করে তাদের হোটেল চালাতেন। তার ব্যবসা দেখে তার ছোট ভাই ইকবাল হোসেন (২৭) একই ব্যবসা শুরু করে। কিন্তু বছর না ঘুরতেই ইমরানের চেয়ে বেশি ক্রেতাকে ইকবাল তার দোকানমুখী করতে সক্ষম হয়। আর এটাই ইকবালের জন্য কাল হয়। শুরু হয় ছোট ভাই ইকবালের সাথে বড় ভাই ইমরানের ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব।
স্থানীয় ও থানা সূত্রে জানা গেছে, ২৬ জুন রাতে ওই ইউনিয়নের উত্তর জামালপুর গ্রামের মো. বাতেন মিয়ার ছেলে আসিফ মিয়া (২৪) পুলিশকে জানায় কলাপাটুয়া গ্রামে ইকবাল হোসেনের বাড়িতে বিয়ার ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে থানার এসআই মো. মোয়াজ্জেম হোসেন ও এএসআই ওমর ফারুক এক দল পুলিশ নিয়ে ওই গ্রামে অভিযান চালায় এবং ইকবালের লাকড়ী রাখার ঘর থেকে ১০ পিস বিদেশি বিয়ার উদ্ধার করে। পরে সেই সূত্রে লাকড়ী ঘরের মালিককে আটক করে পুলিশ। এক পর্যায়ে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ইকবাল তার ভাইয়ের সঙ্গে ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের কথা উল্লেখ করে এবং এই বিয়ার তারই সাজানো নাটক। এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশকে খবর দেওয়া আসিফ দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। পরে জানা যায় আসিফ ইমরানের মাংসের দোকানের কর্মচারী। এ সময় পুলিশ কৌশলে ইমরানকে খবর দিয়ে ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এক পর্যায়ে সে তার ছোট ভাইকে ফাঁসানোর বিষয়টি স্বীকার করেন।
পরে এ ঘটনায় কালীগঞ্জ থানার এএসআই ওমর ফারুক বাদী হয়ে প্রকৃত অপরাধী ইমরান হোসেনকে প্রধান করে ৩জনের নামে ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩৬ (১) এর টেবিল ২৪(ক)/৪০/৪১ ধারায় থানায় একটি মামলা (নং ১০) দায়ের করেন।
ইকবাল হোসেন জানান, বড় ভাই ইমরান এর আগেও তাকে ১০ পিস ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়েছে। সেই মামলায় তাকে ২২ দিন কারাবাস করতে হয়েছে। ওই মামলার বাদী কালীগঞ্জ থানার এসআই মো. মোয়াজ্জেম হোসেন ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এর আগে ১০ পিস ইয়াবা দিয়ে ইকবালকে আদালতে চালান করা হয়েছিল।
কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ একেএম মিজানুল হক বলেন, প্রাথমিকভাবে ইমরানে তার ছোট ভাইয়ের সাথে ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের সত্যতা মিলেছে। এছাড়া ১০ পিস বিদেশি বিয়ার দিয়ে ইকবালকে ফাঁসানো বিষয়টিও সে স্বীকার করেছে। এ ব্যাপারে থানায় একটি নিয়মিত মামলা হয়েছে। ইমরানকে আদালতের মাধ্যমে গাজীপুর জেলে প্রেরণ করা হয়েছে। মামালার বাকী আসামীদের আটকের ব্যাপারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।