১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিতব্য ঠাকুরগাঁও জেলা পরিষদ নির্বাচনে ৩ নং ওয়ার্ডে (পীরগঞ্জ) কে সদস্য নির্বাচিত হচ্ছেন এ আলোচনা এখন সর্বত্র। সাত জন প্রার্থী এ পদের জন্য লড়াই করলেও দুই জন রয়েছেন আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে। একজন হলেন গিয়াস উদ্দীন আর অন্যজন মোস্তাফিজার রহমান। গিয়াসউদ্দীন বৈদ্যুতিক পাখা মার্কা নিয়ে ভোট করছেন। মোস্তাফিজার করছেন হাতি মার্কা নিয়ে। ১৪৫ জন ভোটারের মন জয় করতে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন তারা।
ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা কার্যালয় ছাড়াও ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন তারা। অন্য প্রার্থীরাও মাঠে আছেন। তবে তাদের তেমন নাম ডাক শোনা যাচ্ছে না। গিয়াসউদ্দীনের পক্ষে পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক এমপি ইমদাদুল হক, উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি আলহাজ¦ আখতারুল ইসলাম সহ বেশ কয়েকজন ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সরাসরি ভোট করছেন। আর প্রকাশ্যে না হলেও ভিতরে ভিতরে মোস্তাফিজারের পক্ষে ভোট করছেন স্থানীয় আওয়ামীলীগের দ্বিতীয় সারির কিছু নেতা। গিয়াস উদ্দীন ও মোস্তাফিজারকে নিয়ে চলছে স্থানীয় রাজনৈতিক খেলা। একটি মহল গিয়াসকে ভোটে হারিয়ে দিয়ে তাদের শক্তি প্রমান করার চেষ্টা করছেন আর একটি মহল তাদের আধিপত্য চিকিয়ে রাখতে সোচ্চার রয়েছেন। তবে উভয় প্রার্থীর বিরদ্ধে ব্যাপক টাকা ছড়ানোর অভিযোগ রয়েছে। যদিও এ অভিযোগ স্বীকার করেননি কোন প্রার্থী। তবে একে অপরের বিরুদ্ধে টাকা ছড়ানো সহ নির্বাচনী আচরণ বিধি লংঘনের অভিযোগ তুলছেন।
এ অবস্থায় শেষ মুহুর্তে জনপ্রতিনিধি ভোটারদের আকৃষ্ট করতে নেতাদের পাশাপাশি এ দুই প্রার্থীও চালাচ্ছেন নানা রকম প্রচারণা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও চলছে ব্যাপক প্রচার প্রচারণা। ভোটাররা বলছেন, সাধারণ নির্বাচনের মতো জেলা পরিষদের ভোট নয়-এখানে ভোটাররা সকলেই জনপ্রতিনিধি। সে কারণে গতানুগতিক নির্বাচন থেকে এটি একটি আলাদা নির্বাচন। প্রার্থীদের সম্পর্কে চুলচেরা বিশ্লেষন করছেন তারা। সেক্ষেত্রে কার মাধ্যমে এলাকার বেশী উন্নয়ন হবে এবং কে সরকারের উচ্চ দপ্তর থেকে এলাকার জন্য বেশি বরাদ্দ আনতে পারবেন সেটির উপর গুরুত্ব দিচ্ছেন। এছাড়াও বিপদ-আপদে যাকে পাবেন এবং যার মাধ্যমে বিপদ থেকে উদ্ধার পাবার পথ সুগম হবে তার কথাও ভাবা হচ্ছে। বিগত সময়ে কোন প্রার্থী এলাকার জন্য কি আবদান রেখেছেন এবং উন্নয়নের নামে সরকারী বরাদ্দের কি হাল করেছেন তাও বিবেচনায় রাখছেন তারা।
মিষ্ঠিভাষী, সদালাপী তরুণ ব্যক্তিত্ব উপজেলার জাবরহাট এলাকার বাসিন্দা ও জাবরহাট হেমচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের একাধিক বারের নির্বাচিত সভাপতি মোঃ গিয়াস উদ্দিন বলেন, তিনি জেলা যুব লীগের সদস্য এবং সকারের উচ্চ মহলের সাথে তার ঘনিষ্ট যোগাযোগ রয়েছে। সেজন্য এলাকার উন্নয়নে তিনি বাড়তি আবদান রাখতে পারবেন। তাছাড়া উপজেলা সকল রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের সাথে সু সম্পর্ক রয়েছে তার। তারা সবাই নিজেরাই স্বউদ্যোগে তার জন্য ভোট করছেন। এলাকার পাশাপাশি রাজধানী ঢাকাতেও তিনি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিষয়ে এলাকার মানুষের কাজে এগিয়ে এসেছেন। অনেকের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছেন। আগামীতেও এ ধারা অব্যাহত রাখবেন। সে জন্য ভোটের মাঠে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন। আশা করছেন বিপুল ভোটের ব্যবধানে ভোটাররা তাকে জয়ী করবেন।
অন্য দিকে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান বলছেন, এলাকার উন্নয়নে তিনিও কাজ করার লক্ষে ভোট করছেন। নির্বাচন অবাধ,সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ হলে তার বিজয় নিশ্চিত। তিনি আরো বলেন, তার চাচা এর আগে জেলা পরিষদের সদস্য ছিলেন, অনেক দিন ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনিও ইউয়িন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। জন প্রতিনিধি পরিবারের সদস্য তিনি। তার জানা আছে- কিভাবে এলাকার এবং জনগনের উন্নয়ন করতে হয়। তিনি এর আগে ইউনিয়ন পরিষদের মানুষের জন্য কাজ করেছেন। এবার উপজেলার মানুষের কাজ করার প্রতিজ্ঞা নিয়ে জেলা পরিষদ নির্বাচনে সদস্য পদে প্রার্থী হয়েছেন। এজন্য উপজেলা সকল ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ভোটার, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের সহযোগীতা চান তিনি।
ভোটার, রাজনীতিবিদ, সুমীল সমাজ মনে করছেন গিয়াস এবং মোস্তাফিজারের মধ্যেই তুমুল লড়াই হবে। বিজয়ের শেষ হাসি কে হাসবেন এর জন্য অপেক্ষা করতে হতে ভোটের ফলাফল ঘোষনা করা পর্যন্ত।
সবার সংবাদ ২৪ ডট কম