পীরগঞ্জের ভোমরাদহ স্টেশনে দোলনচাঁপা ট্রেনের যাত্রা বিরতির দাবী এলাকাবাসীর

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২২
পীরগঞ্জের ভোমরাদহ স্টেশনে দোলনচাঁপা ট্রেনের যাত্রা বিরতির দাবী এলাকাবাসীর

ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার ভোমরাদহ স্টেশনে দোলনচাঁপা এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রা বিরতির দাবীতে মানববন্ধন, গণস্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযান সহ নানা কর্মসূচী পালন করছেন এলাকাবাসী। কর্মসূচীর অংশ হিসেবে রবিবার সকাল থেকে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ কর্মসূচী পালন করা হয়।

স্থানীয় সমাজ সেবামূলক প্রতিষ্ঠান দোয়েল সংস্থার চেয়ারম্যান প্রভাষক তারেক হোসেন জানান, ভোমরাদহ রেল স্টেশনটি অত্র অঞ্চলের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ন স্টেশন। এ স্টেশনের সাথে ভোমরাদহ বাজার, জনগাঁও বাজার, কাতিহার হাট, বাংলাগড়, নেকমরদ হাট সহ ধর্মগড় বাজারের সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। এক সময় এ স্টেশন থেকে মালামাল খালাস করে এ অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা ব্যবসায়িক কর্মকান্ড পরিচালনা করতেন। মালামাল সহ এ অঞ্চলের অসংখ্য যাত্রী ট্রেনে করে জেলা শহর ঠাকুরগাঁও ছাড়াও দিনাজপুর, রংপুর সহ বিভিন্ন অঞ্চলে যাতায়াত করতেন। স্টেশনটি থেকে রাজস্ব আদায়ও হতো অনেক। এখানে একটি সরকারি খাদ্য গুদামও রয়েছে। বর্তমানে পঞ্চগড় থেকে ভোমরাদহ হয়ে ঢাকা, রাজশাহী, রংপুর ও বগুড়া রুটে ছয়টি ট্রেন চলাচল করলেও একটি লোকাল ট্রেন ছাড়া কোন মেইল বা আন্তঃনগর ট্রেন এ স্টেশনে থামে না। এতে এ অঞ্চলের ব্যবসা বাণিজ্য সহ যোগাযোগ ব্যবস্থা মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। যাত্রীদের পীরগঞ্জ অথবা ঠাকুরগাঁও স্টেশন হতে ট্রেনে উঠা-নামা করতে হচ্ছে যা অত্যন্ত কষ্টকর এবং অনেকটাই ব্যয়বহুল। এ কারণে এ অঞ্চলের অনেকই ট্রেনে যাতায়াত করতে পারছে না। ফলে রেলের যাত্রী সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এলাকার মানুষ।

সম্প্রতি বীরমুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম স্টেশন পঞ্চগড় থেকে ভোমরাদহ হয়ে দিনাজপুর, পার্বতীপুর, রংপুর, গাইবান্ধা ও বগুড়া হয়ে সান্তাহার পর্যন্ত দোলনচাঁপা এক্সপ্রেস টেন চালু হয়েছে। এ ট্রেনটিও ভোমরাদহ স্টেশনে থামে না। এতে করে দাপ্তরিক, চিকিৎসা, পড়াশুনা ও ব্যবসায়িক কাজের জন্য দিনাজপুর, রংপুর, গাইবান্ধা ও বগুড়া যাতায়াতকারী এ অঞ্চলের শত শত যাত্রী ট্রেনটির সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বিশেষ করে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ, হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়, দিনাজপুর সরকারি কলেজ, দিনাজপুর ভেটেইনারী কলেজ, রংপুর মেডিকেল কলেজ, বেগম রোকেয়া বিশ^বিদ্যালয়, কারমাইকেল কলেজ সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, রোগী ও তাদের স্বজনরা দিনাজপুর ও রংপুরে সহজেই এ ট্রেনে করে যেতে বা আসতে পারছে না। দাপ্তরিক কাজে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড ও বিভাগী শহর রংপুরের যাওয়া সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এ এলাকার মানুষ। এ ছাড়াও এ এলাকায় গাইবান্ধা ও বগুড়া অঞ্চলের অনেক লোক বসবাস করেন। তারাও তাদের আতœীয় স্বজনদের বাড়িতে সহজেই এ ট্রেনে করে যাতায়াত করতে পারছেন না।

এ অবস্থায় ভোমরাদহ রেল স্টেশনে বিশেষ করে দোলনচাঁপা ট্রেনের যাত্রা বিরতি একান্ত দরকার বলে জানান ভোমরাদ পিএস ক্লাব ও ফ্রেন্ড ক্লাবের নেতৃবৃন্দ সহ এলাকাবাসী। বিষয়টির প্রতি দৃষ্টি দিতে এরই মধ্যে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেছেন তারা। গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করছেন এবং আরো লাগাতার বিভিন্ন শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী চালিয়ে যাবেন বলে জানান এলাকাবাসী।

এ বিষয়ে পীরগঞ্জ রেল স্টেশনের সহকারি স্টেশন মাষ্টার সোহরাব হোসেন সুজন বলেন, দোলনচাঁপা এক্সপ্রেস ট্রেনটি সকাল ৬ টায় পঞ্চগড়ে ছাড়ে। পীরগঞ্জে সকাল ৭ টা ২২ মিনিটে আসে ৩ মিনিট বিরতি দিয়ে সান্তাহারের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। আর ক্রসিং হলে একটু দেরি হয়। ৭ টা ৩৭ মিনিটে দোলনচাঁপা পীরগঞ্জ থেকে তার গন্তব্যে ছেড়ে যায়। ট্রেনটি সকালের দিকে দিনাজপুর, রংপুর, গাইবান্ধা ও বগুড়া হয়ে সান্তাহারের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। আবার সান্তাহার থেকে সকাল ১১টার দিকে ছেড়ে বিকাল ৩টায় রংপুর রংপুরে এসে পৌঁছায়। এরপর পারবর্তীপুর, দিনাজপুর হয়ে সন্ধ্যা ৬টা ৪৬ মিনিটে পীরগঞ্জে আসে। এরপর পঞ্চগড়ের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এ কারণে ঠাকুরগাও-পঞ্চগড় এলাকার শিক্ষার্থী, রোগী ও দাপ্তরিক কাজে দিনাজপুর ও রংপুরে যাতায়াতকারীদের জন্য ট্রেনটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে। ভোমরাদহের লোকজনের দাবি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ বিবেচনায় নিতে পারেন।

সবার সংবাদ ২৪