পঞ্চগড়ে নৌকাডুবি: ৪৯ মরদেহ উদ্ধার

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২২
পঞ্চগড়ে নৌকাডুবি: ৪৯ মরদেহ উদ্ধার

পঞ্চগড়ের বোদায় করতোয়া নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় ৪৯ যাত্রীর মরদেহ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে সোমবার উদ্ধার মরদেহগুলোর মধ্যে দিনাজপুরের খানসামার আত্রাই নদীর জিয়া সেতুর নিচ থেকে ৮ জনের, বোদায় ১৪ জনের ও দেবীগঞ্জে ২ জনের মরদেহ পাওয়া গেছে। নিখোঁজ রয়েছে আরো প্রায় ৪০ জন।

পঞ্চগড় ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক সৈয়দ মাহাবুবুল আলম জানান, ‘সকাল সাড়ে ৫টায় দ্বিতীয় দিনের মতো নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধারে কার্যক্রম শুরু হয়। রংপুর, কুড়িগ্রাম ও রাজশাহী থেকে ডুবুরি দলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে পঞ্চগড় ফায়ার সার্ভিস।

বোদা উপজেলার মারেয়া আউলিয়া-বদ্বেশ্বরী ঘাটে করতোয়া নদীতে রোববার দুপুরে শতাধিক যাত্রী নিয়ে একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা ডুবে যায়, যার বেশির ভাগই মহালয়ার পুণ্যার্থী ছিলেন। তারা নদীর ওপারে বদ্বেশ্বরী মন্দিরে যাচ্ছিলেন।

এই প্রাণহানির জন্য অতিরিক্ত যাত্রী বহনকে দায়ী করেছেন জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘নৌকায় অতিরিক্ত যাত্রী ছিল। ঘটনাস্থলে মারওয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও পুলিশ সদস্য ছিলেন। তারা সবাই ওই নৌকায় এত লোক উঠতে নিষেধ করেছিলেন।

‘ বৃষ্টি হওয়ার কারণে নদীতে পানি বেশি ছিল, স্রোতও বেশি ছিল। নিষেধ করতে করতেই সবাই উঠে যান। যেহেতু ধর্মীয় বিষয় সবাই উঠতে চাইছিলেন। এরপর মাঝনদীতে গিয়ে ডুবে যায় নৌকাটি।’

নৌকার বেঁচে যাওয়া যাত্রী মাড়েয়া বামনপাড়া এলাকার সুবাস চন্দ্র রায় বলেন, ‘নৌকায় দেড় শরও বেশি যাত্রী ছিল। আমরা ওঠার পর পরই নৌকায় পানি ঢুকতে শুরু করে। এ সময় মানুষজন নৌকার মধ্যেই হুড়োহুড়ি শুরু করে।

‘যে পাশেই যাচ্ছিলাম, সে পাশেই নৌকায় পানি ঢুকছিল। আমরা পাঁচ বন্ধু ছিলাম। কোনোমতে সাঁতার কেটে প্রাণে বেঁচে যাই। অন্য যাত্রীরা একে অন্যকে জড়িয়ে ধরে বাঁচার আকুতি করছিল। ওই মুহূর্তের বর্ণনা করতে পারব না। তবে এত মানুষ মারা যাবে, তা বুঝতে পারিনি।’

এদিকে এই দুর্ঘটনা তদন্তে পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অথৈ আদিত্যকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।